title
stringlengths
10
148
text
stringlengths
14
34.6k
summary
stringlengths
1
7.08k
মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত বাড়লে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে: বিশ্বব্যাংক
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় চলমান সংঘাত বাড়লে জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, সার, খাদ্যসহ অন্যান্য পণ্যের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে। ফলে ফের ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির হার।  এ অঞ্চলে সংঘাত আরও বাড়লে জ্বালানি তেলের প্রতি ব্যারেলের দাম বেড়ে ৯২ ডলারে উন্নীত হতে পারে। সংঘাতের কারণে সরবরাহব্যবস্থায় গুরুতর ব্যাঘাত ঘটলে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ছাড়িয়ে যেতে পারে ১০০ ডলার। তখন বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে পারে এক শতাংশ। বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক, এপ্রিল ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে এমন পূর্বাভাস। প্রতিবেদনটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে অবস্থিত বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তর থেকে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় চলমান সংঘাত আর সম্প্রসারিত না হলে বৈশ্বিকভাবে জ্বালানি তেলসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম আরও কিছুটা কমে আসবে। তবে তা করোনার আগের বছরগুলোর চেয়ে বেশি থাকবে। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা আর না বাড়লে চলতি বছর বৈশ্বিকভাবে সব ধরনের পণ্যমূল্য গড়ে ৩ শতাংশ এবং ২০২৫ সালে গড়ে ৪ শতাংশ কমতে পারে বলে আভাস দিয়েছে সংস্থাটি।  এতে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের হরমুজ প্রণালি দিয়ে তরল জ্বালানির প্রায় ২০ শতাংশ পরিবহণ করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় সংঘাত বাড়লে এ প্রণালি দিয়ে পণ্য পরিবহণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বাধার ধরনের ওপর নির্ভর করে বৈশ্বিকভাবে পণ্যের সরবরাহ যেমন বিঘ্ন ঘটতে পারে, তেমনই এর দামও প্রভাবিত হতে পারে; যা উসকে দিতে পারে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির হারকে। এতে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে পারে এক শতাংশ পর্যন্ত। বর্তমানে বৈশ্বিকভাবে মূল্যস্ফীতির যে নিম্নমুখিতা, তা বাধাগ্রস্ত হবে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সুদের হার কমানোর পরিকল্পনাও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত বাড়ায় চলতি মাসে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম ৮২ থেকে বেড়ে ৯১ ডলারে উঠেছে। সংঘাত সম্প্রসারিত না হলে জ্বালানি তেলের দাম চলতি বছর ৮৪ ডলারের মধ্যে থাকতে পারে। আগামী বছর এর দাম ৭৯ ডলারে নামতে পারে। আর সংঘাত যদি আরও বাড়তে থাকে, জ্বালানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হবে। তখন প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ৯২ ডলারে ওঠতে পারে। হরমুজ প্রণালি দিয়ে জ্বালানি পরিবহণ আরও বাধাগ্রস্ত হলে প্রতি ব্যারেলের দাম ছাড়িয়েও যেতে পারে ১০০ ডলার। একই সঙ্গে প্রাকৃতিক গ্যাস, সার এবং খাদ্যের দামও বাড়তে পারে। এলএনজি সরবরাহ ব্যাহত হলে সারের দামও যথেষ্ট বৃদ্ধি পাবে, সম্ভবত বাড়বে খাদ্যের দাম। উল্লে­খ্য, ফিলিস্তিনে ইসরাইলের অব্যাহত আক্রমণকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় উত্তেজনা চলছে। এর সঙ্গে লেবানন ও ইরান জড়িয়ে পড়েছে। এ সংঘাতকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে ওমান উপসাগরের হরমুজ প্রণালিতে দুটি জ্বালানি তেলবাহী জাহাজে হামলার ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র এর জন্য দায়ী করেছে ইরানকে। ইরান তা অস্বীকার করেছে।হরমুজ প্রণালি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে পণ্য আদান-প্রদানের অন্যতম একটি সহজ সমুদ্রপথ। এ প্রণালির একদিকে আরব দেশগুলো এবং অন্যপাশে রয়েছে ইরান।  বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদনে বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত সীমিত থাকলে বিশ্বে সামগ্রিকভাবে খাদ্যের দাম কিছুটা কমতে পারে। এর মধ্যে শুধু খাদ্য উপকরণের দাম চলতি বছর ৬ শতাংশ এবং আগামী বছর ৪ শতাংশ কমতে পারে। সারের দাম চলতি বছর ২২ এবং আগামী বছর ৬ শতাংশ কমতে পারে। পণ্যমূল্য নিম্নমুখী হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো পর্যায়ক্রমে ঋণের সুদের হারও কমাতে পারবে। তবে পণ্যের দাম কমলেও করোনা মহামারির আগের পাঁচ বছরের চেয়ে পণ্যের দাম গড়ে ৩৮ শতাংশ বেশি থাকতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের মধ্যেও বৈশ্বিকভাবে পণ্যমূল্য কমছে। এর সঙ্গে মূল্যস্ফীতির হারও নিম্নমুখী। ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে। এতে ওই সময়ের ব্যবধানে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে ২ শতাংশ।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় চলমান সংঘাত বাড়লে জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, সার, খাদ্যসহ অন্যান্য পণ্যের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে। ফলে ফের ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির হার।
সংগীতশিল্পীর আড়ালে রেবেলের মাদক কারবার, কাজ করেন ভাইজানের হয়ে
কোটি টাকার মাদক ক্রিস্টাল মেথসহ (আইস) সংগীতশিল্পী মো. এনামুল কবির রেবেলকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তিনি ‘উচ্চারণ’ ব্যান্ডের একজন সংগীতশিল্পী।  শুক্রবার রাতে রামপুরার মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে রামপুরা থানা পুলিশ। তার কাছ থেকে এক কেজি আইস উদ্ধার করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। এনামুল কবিরকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির খিলগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, রেবেল মূলত মাদক ব্যবসায়ী মো. লিটন ওরফে লিটু ওরফে ভাইজানের হয়ে কাজ করেন। রেবেল ওই মাদক ব্যবসায়ীর ঠিকানা দিলে পরে বাড্ডা এলাকায় মো. লিটনের বাসায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়। তবে লিটু ও তার সহযোগী অমিত পলাতক রয়েছেন। তাদের কাছ থেকে এক কেজি পরিমাণ আইস উদ্ধার করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি টাকা।  তিনি আরও জানান, পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে লিটুর মাদক ব্যবসায় সহায়তা করে আসছেন রেবেল। একটি অনুষ্ঠানে তাদের পরিচয় হয়। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুইজনের আর্থিক লেনদেনেরও অনেক নজির আছে। তাদের বিরুদ্ধে রামপুরা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া খিলগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ-আল-মামুন জানান, এনামুল কবির মাদকের ডিলার লিটনের কাছ থেকে মাদক নিয়ে বিক্রি করে আসছিলেন। লিটনকে সবাই ভাইজান নামে ডাকে। তবে গত বছরের নভেম্বরে লিটন নিজেকে একজন চাল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন। বাস্তবে লিটন মাদকের গডফাদার। তার গাড়িচালক ও সহযোগী অমিত মাদক ব্যবসার বিষয়গুলো দেখাশোনা করতেন। লিটন মাদক ব্যবসা করায় ঘন ঘন বাসা পরিবর্তন করে আসছিলেন।  তিনি আরও জানান, এনামুল কবিরের বাসা তেজগাঁও ইন্দিরা রোডে। এ ঘটনায় জড়িত ডিলার লিটন ও তার সহযোগী অমিতকে গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।
কোটি টাকার মাদক ক্রিস্টাল মেথসহ (আইস) সংগীতশিল্পী মো. এনামুল কবির রেবেলকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তিনি ‘উচ্চারণ’ ব্যান্ডের একজন সংগীতশিল্পী।
নিজের জন্য কোয়ালিটি সময় দেওয়াই বড় বিনিয়োগ: ব্যবসায়ীদের ডা. জাহাঙ্গীর কবীর
ব্যবসায়ীদের নিজের জন্য সময় ব্যয়ের বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন লাইফ স্টাইল বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ পরিচিতি পাওয়া ডা. জাহাঙ্গীর কবীর। তিনি ব্যবসায়ীদের নিজের জন্য ‘কোয়ালিটি টাইম ইনভেস্টমেন্ট’ করাকে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এজন্য শুধু কিছু খাবার এড়িয়ে সুস্থ্য থাকা সম্ভব নয়। পরিমিত ঘুম ও শরীরের চাহিদা অনুপাতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসও গড়ে তুলতে হবে।  ডা. জাহাঙ্গীর কবীর মনে করেন, অর্থ দিয়ে সময় কিনতে পাওয়া যায় না। তাই শত ব্যস্ততার মধ্যেও আল্লাহর দেওয়া মূল্যবান সময়কে নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য সদ্ব্যবহার করতে হবে।  শনিবার বিকালে রাজধানীর আফতাবনগরে জে কে লাইফস্টাইল লিমিটেড হলরুমে আয়োজিত ‘উদ্যোক্তাদের লাইফস্টাইল কেমন হবে’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারে ১০০ জন ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অনেকে অংশ নেন। সেখানে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের কয়েকজন নিজেদের অসুস্থতা ও দৈনন্দিন জীবনাচার সম্পর্কে অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এ সময় ওষুধ ছাড়াই কিভাবে ব্যবসায়ীদের রোগমুক্ত থাকা সম্ভব সে বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে ডা. জাহাঙ্গীর কবীর প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন।  তিনি বলেন, অন্যান্য পেশার মানুষের মত ব্যবসায়ীদের জীবনাচারও রুটিন-মাফিক হওয়া উচিত। এজন্য সবার আগে সময়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া এবং শত ব্যস্ততার মধ্যে নিজের জন্য সময় বের করা খুবই জরুরি। তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের যত শারীরিক মানসিক চাপ থাকুক না কেন, সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে বাড়ি ফেরা এবং পরিবারকে কিছুটা সময় দিতেই হবে। রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ঘুম, ভোরে ঘুম থেকে ওঠা, প্রার্থনা করা এবং এক থেকে দেড় ঘণ্টা শারীরিক ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। শারীরিক ও মানসিক প্রফুল্লতার জন্য সকালের সূর্যের আলোতে হাঁটা ও নিয়মিত মেডিটেশনের (ধ্যান) কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খেলাধুলা বা কোয়ালিটি টাইমও দিতে হবে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পরিবার ও দেশের মানুষের জন্য কীটনাশকমুক্ত পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য নিশ্চিত করতে হেলদি প্রজেক্ট বা প্রাকৃতিক কৃষি পণ্য উৎপাদন ও সম্প্রাসরণে শিল্পপতিদের এগিয়ে আসতে হবে।  তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা জমি দিলে অর্গানিক খাদ্যপণ্য উৎপাদনে সব রকম সমর্থন আমি ও আমার প্রতিষ্ঠান দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিনিময়ে কোনো লাভ নেব না। সেমিনারে জে কে লাইফস্টাইল লিমিটেড ও কক্সবাজারের টেকনাফে অবস্থিত পর্যটন প্রতিষ্ঠান ‘সিনবাদ বিচ অ্যান্ড ইকো রিসোর্ট’ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি সমোঝতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। জে কে লাইফস্টাইলের পক্ষে ডা. জাহাঙ্গীর কবীর এবং সিনবাদ বিচ অ্যান্ড ইকো রিসের্টের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থপনা পরিচালক হাসনাইন আব্দুল্লাহ নাসিফ চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন। সমঝোতার আলোকে সিনবাদ বিচ অ্যান্ড ইকো রিসোর্ট জে কে লাইফ স্টাইলের কয়েকটি গাইডলাইন মেনে চলবে।
ব্যবসায়ীদের নিজের জন্য সময় ব্যয়ের বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন লাইফ স্টাইল বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ পরিচিতি পাওয়া ডা. জাহাঙ্গীর কবীর। তিনি ব্যবসায়ীদের নিজের জন্য ‘কোয়ালিটি টাইম ইনভেস্টমেন্ট’ করাকে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এজন্য শুধু কিছু খাবার এড়িয়ে সুস্থ্য থাকা সম্ভব নয়। পরিমিত ঘুম ও শরীরের চাহিদা অনুপাতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসও গড়ে তুলতে হবে।
থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় থাই প্রধানমন্ত্রী জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে যান তিনি।  শুরুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সেখানে থাই কুহ ফাহ বিল্ডিংয়ের সামনের লনে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এ সময় থাইল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল কর্তৃক প্রদত্ত গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের শেখ হাসিনার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। শেখ হাসিনা পরে সরকারি ভবনের অতিথি বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করতে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় নথিতে স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। সরকারি বাসভবন ত্যাগের আগে শেখ হাসিনা সেখানে আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তার থাই প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সরকারি সফর করছেন।
থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় থাই প্রধানমন্ত্রী জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি আরও বাড়বে কি না, জানা যাবে শনিবার
চলমান তাপদাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও বাড়বে কি না সে বিষয়ে আগামী শনিবারের মধ্যে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার। রাজধানীর সচিবালায়ে নিজ দপ্তরে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। বর্তমান তাপপ্রবাহ পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হবে কি না, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাপমাত্রার কথা বলা যায় না। আপ-ডাউন হয়। আমাদের দুদিন (শুক্র ও শনিবার) বন্ধ আছে, আমরা একটু দেখি। দেখে তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আবহাওয়া দপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা বলেছে যে তাপমাত্রাটা বাড়তে পারে। কিন্তু আমাদের মন্ত্রী মহোদয় বিদেশে আছেন। উনি কালকেই (শুক্রবার) বোধহয় ফিরবেন, তিনি ফেরার পর আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার পূর্বাভাসের পরিপ্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে। যদি স্কুল খোলা রাখা হয় তবে শিশুদের স্কুলের সময় এগিয়ে আনা এবং ক্লাস সংখ্যা কমানোরও প্রস্তাব দিয়েছে তারা। এ বিষয়গুলো নিয়ে আপনারা কাজ করছেন কিনা, জানতে চাইলে শামসুন নাহার বলেন, সেটা নিয়ে কাজ করবো পরে। আগে সামনের যেটা আছে সেটা শেষ করে নিই। আপনাদের বিকল্প কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, এ বিষয়ে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনলাইন তো আছে, সেটা আমরা পরে দেখবো। গ্রাম পর্যায়ে স্কুল আছে, তারা অনলাইনে অভ্যস্ত না। অতএব সবকিছু চিন্তা করেই আমাদের কাজ করতে হবে। দেশব্যাপী তাপদাহ বইছে। ঈদুল ফিতর ও নববর্ষের ছুটি শেষে গত রোববার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। কিন্তু প্রচণ্ড গরমের কারণে ছুটি এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। আগামী রোববার থেকে স্কুল খোলার কথা।
চলমান তাপদাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও বাড়বে কি না সে বিষয়ে আগামী শনিবারের মধ্যে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার।
থাইল্যান্ড পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে ব্যাংকক পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৮ মিনিটে ব্যাংকক ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তাকে লাল গালিচা উষ্ণ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাকে থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল অভ্যর্থনা জানান। বিমানবন্দরে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান এবং ১৯ রাউন্ড গান স্যালুট দেওয়া হয়। থাইল্যান্ডের মিনিস্টার-ইন-অ্যাটেন্ডেন্স পুয়াংপেট চুনলাইদ, বাংলাদেশে থাই রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর এবং থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল হাই বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয় সফরের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সরকারি সফরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে আজ সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে ঢাকা ত্যাগ করেন। ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল তার সফরের সময় শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন এবং জাতিসংঘের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে ব্যাংকক পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
থাইল্যান্ড গেলেন প্রধানমন্ত্রী
দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে ছয় দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে আজ বুধবার সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে ফ্লাইটটি ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটির অবতরণের কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত থাইল্যান্ড সফর উপলক্ষে সোমবার মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ সময় তিনি বলেন, ‘এটি একটি দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় উভয় সফর। এই সফর উভয় পক্ষের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এতে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের (বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড) মধ্যে সহযোগিতার নতুন জানালা উন্মোচিত হবে।’ গত জানুয়ারিতে সরকার গঠনের পর এটিই হবে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড দুই দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনার অভিপ্রায়পত্রসহ বেশ কিছু সহযোগিতার নথিতে সই করবে। বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি, শক্তি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য পর্যটন খাতে সহযোগিতা এবং শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আরও দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সফর বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’ পর্যালোচনার সুযোগ তৈরি করবে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার জন্য বাংলাদেশের আবেদনের বিষয়টি ঢাকা জোরালোভাবে উত্থাপন করবে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য হিসেবে থাইল্যান্ডের প্রতি তার তাগিদ পুনর্ব্যক্ত করবে। যেহেতু থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার উভয়ই আসিয়ানভুক্ত, তাই রোহিঙ্গা ইস্যুটি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, উচ্চ পর্যায়ের সফরে বিনিয়োগ, পর্যটন, জ্বালানি, স্থল ও সমুদ্র সংযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হবে। বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড যৌথ কার্যক্রমের মাধ্যমে পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারে এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন, বৌদ্ধ সার্কিট কর্মসূচি প্রচারের পাশাপাশি ভ্রমণ ও অবকাশ শিল্পে বিনিয়োগের  ক্ষেত্রে দক্ষতা বিনিময় করতে পারে। মন্ত্রী বলেন, পর্যটন শিল্পে এই সহযোগিতা উভয় দেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। ২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন স্বাগত জানাবেন এবং তাকে একটি আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) একান্ত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন, নথিতে স্বাক্ষরে উপস্থিত থাকবেন, একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং এরপর সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে থাই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া একটি রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজপ্রাসাদে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাক্লাওচাওয়ুহুয়া এবং রানী সুথিদা বজ্রসুধাবিমলালক্ষণের রাজকীয় দর্শকদের সঙ্গে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী ২৫ এপ্রিল  ইউএনএসক্যাপ-এর ৮০তম অধিবেশনে যোগদান করবেন এবং সেখানে ভাষণ দেবেন। একই দিনে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল এবং এসক্যাপের নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়াহ আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।  ‘লিভারেজিং ডিজিটাল ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৮০তম অধিবেশনটি টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে অঞ্চলব্যাপী সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ জোরদার করার একটি সুযোগ হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটাল উদ্ভাবন কীভাবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারি নেতারাসহ বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী এবং অন্যান্য মূল অংশীজনরা এই অধিবেশনে অংশ নেবেন।
দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে ছয় দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে আজ বুধবার সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
পুঁজিবাজার অস্থিতিশীলকারী চক্রের ৩ জন গ্রেফতার রিমান্ড
অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে গুজব ছড়িয়ে পুঁজিবাজার অস্থিতিশীলকারী চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।  গ্রেফতাররা হলেন- মো. আমির হোসাইন ওরফে নুরনুরানী, নুরুল হক হারুন ও আব্দুল কাইয়ুম।  শুক্রবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ (দক্ষিণ)।  ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. সাইফুর রহমান আজাদ যুগান্তরকে বলেন, গ্রেফতারদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে শনিবার তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।  রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে জানিয়ে এডিসি আজাদ বলেন, চক্রের অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।  ডিবির দাবি, তারা (আসামিরা) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পুঁজিবাজার, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ও বিভিন্ন শেয়ারের দাম নিয়ে কারসাজি এবং গুজব রটিয়ে মার্কেটকে অস্থিতিশীল করে। গ্রেফতারদের মধ্যে আমির হোসাইন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে ৮ থেকে ১০টি গ্রুপ চালাতেন। এর মাধ্যমে শেয়ারের দাম নিয়ে কারসাজি ও গুজব রটিয়ে মার্কেটকে অস্থিতিশীল করতেন। তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দমন আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১১টি মামলা রয়েছে। নুরুল হক হারুন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি। তিনি বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নামে বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে চাঁদা দাবি করতেন। অপর অভিযুক্ত আব্দুল কাইয়ুম রয়েল ক্যাপিটাল নামক ব্রোকারেজ হাউজের সঙ্গে যুক্ত। তিনি হোয়াটস্যাপ এবং টেলিগ্রাম গ্রুপে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন শেয়ার সম্পর্কে তথ্য দিতেন।  শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টুরোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, পুঁজিবাজার একটি স্পর্শকাতর জায়গা। দেশের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানে অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী তাদের সর্বস্ব নিয়ে এসে বিনিয়োগ করে থাকেন। অল্পতেই এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক থাকে। একটি স্বার্থান্বেষী চক্র দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজার এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, কমিশনের চেয়্যারম্যানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে গোপনীয় গ্রুপ খুলে বিভিন্ন মিথ্যা, ভুয়া এবং প্রতারণামূলক তথ্য সরবরাহ করে আসছে। তারা নিজেদের স্বার্থের জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। তারা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতো। তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এ বিষয়ে গত ২৫ এপ্রিল রমনা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এ মামলার তদন্ত করে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। ডিবির হারুন বলেন, গ্রেফতাররা মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর জন্য ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে গোপনীয় গ্রুপ ব্যবহার করতো। গ্রুপগুলোতে তারা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, কমিশনের চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এবং পুঁজিবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার নামে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য দিয়ে বিভিন্ন প্রকার প্রাইস সেনসেটিভ ইনফরমেশন (মূল্য সংবেদনশীল তথ্য) আগে প্রকাশ করে দেয় (যা বেশিরভাগ সময় বানোয়াট ও মিথ্যা)। যার ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হতো। তারা বিভিন্ন সময় আন্দোলনের নামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে রাস্তা দখল করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতো। তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁদা দাবি করতো। চাঁদা না দিলে ওইসব কোম্পানি সম্পর্কে অনলাইনে অপপ্রচার শুরু করতো। এমনকি কোম্পানির অফিসগুলোতেও হামলা করতো। গ্রেফতাররা পুঁজিবাজারে বিভিন্ন শেয়ার নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দাম বৃদ্ধি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে উচ্চমূল্যে বিক্রি করতো এবং এসব করার জন্য গোপনীয় হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপ ব্যবহার করতো। এসব গ্রুপের সদস্যদের একটি নির্দিষ্ট ফি দিয়ে গ্রুপে যুক্ত হতে হতো। আবার শেয়ারে প্রফিট (লাভ) হলে লভ্যাংশের অংশ তাদেরকে দিতে হতো। লোকসান হলে তারা দায়িত্ব নিতো না। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন অনুযায়ী, যেকোনো শেয়ারের মূল্য নিয়ে তথ্য আদান-প্রদান সম্পূর্ণ অবৈধ।
অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে গুজব ছড়িয়ে পুঁজিবাজার অস্থিতিশীলকারী চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে বাসে আগুন দিয়ে হত্যা
রাজধানীর ডেমরায় গত বছরের ২৮ অক্টোবর দিবাগত গভীর রাতে অছিম পরিবহণের বাসে আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছিল বলে দাবি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।  এ ঘটনায় অভিযুক্ত বিএনপির তিন নেতাকর্মীকে গ্রেফতারও করেছে সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ বিভাগের অ্যান্টি ইলিগ্যাল আর্মস অ্যান্ড ক্যানাইন টিম।  গ্রেফতাররা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম মনির ওরফে মনির মুন্সি, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. সাহেদ আহমেদ এবং বিএনপি কর্মী ও মনির মুন্সির ব্যক্তিগত ড্রাইভার মাহাবুবুর রহমান সোহাগ। তাদের কাছ থেকে ঘটনার সময় ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়েছে।  শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টুরোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।  সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, মনির মুন্সি নির্দেশদাতাদের থেকে নির্দেশনা পেয়ে এই কাজ শুরু করেন। তিনি আরও বড় ধরনের ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলেন। দলের আরও বড় পদ পাওয়ার প্রত্যাশায় ছিলেন তিনি। ঘটনার নির্দেশদাতাদের শনাক্ত করা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নির্দেশদাতাদের নাম আমরা পেয়েছি। তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তাদেরও গ্রেফতার করা হবে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের বিষয়ে এখনই কোনো তথ্য বলব না। সিটিটিসি প্রধান বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের উদ্দেশে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি রাজধানীর পল্টন এলাকায় নারকীয় তাণ্ডব চালায়। বিএনপির নেতাকর্মীরা সেদিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করার মতো জঘন্য কাজসহ অসংখ্য গাড়ি ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। তারই ধারাবাহিকতায় ২৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে ডেমরার দেইল্লা বাসস্ট্যান্ডে রাখা অছিম পরিবহণের একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। তাদের দেওয়া আগুনে ওই বাসে ঘুমিয়ে থাকা হেলপার মো. নাইম ঘটনাস্থলে পুড়ে মারা যান এবং অপর হেলপার মো. রবিউল দগ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন। এ ঘটনায় ডেমরা থানায় একটি মামলা হয়। গত বছরের ১১ নভেম্বর মামলাটি সিটিটিসিতে হস্তান্তর করা হয়। মামলাটি তদন্ত শুরু করে সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ বিভাগের অ্যান্টি ইলিগ্যাল আর্মস অ্যান্ড ক্যানাইন টিম। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, তদন্তভার গ্রহণের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনাস্থলের চারপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একটি হ্যারিয়ার গাড়ি শনাক্ত করা হয়, যা ওইদিন অগ্নিসংযোগে ব্যবহৃত হয়েছিল। এই গাড়ির সূত্র ধরে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূল অগ্নিসংযোগকারী ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার এবং ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়িটি জব্দ করা হয়। ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মনির মুন্সি তার নেতাদের কাছ থেকে নির্দেশনা পান। নির্দেশনার মূল বিষয়বস্তু ছিল নাশকতার মাত্রা আরও বাড়ানো এবং এমন কোনো ঘটনা ঘটানো যাতে করে জনমনে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। তারই অংশ হিসেবে তিনি (মনির) বেশ কয়েকজনকে অগ্নিসংযোগের জন্য নিয়োগ দেন এবং তিনি নিজে বড় একটি ঘটনা ঘটানোর জন্য তার অপর সহযোগী নারায়ণগঞ্জ যুবদলের সদস্য সচিব ও তার বন্ধু সাহেদ আহমেদকে ডেকে নেন। তারা দুজনে মিলে একটি পরিকল্পনা করে এমন একটি ঘটনা ঘটাবেন যাতে জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে ডেমরা এলাকার দেইল্লা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাত দুইটার পর বেশ কয়েকবার গাড়ি দিয়ে ঘুরে ঘুরে রেকি করেন এবং দেখতে থাকেন কোন জায়গাটা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতামুক্ত।  তিনি বলেন, অবশেষে তারা (মনির ও তার সহযোগীরা) কাঙ্ক্ষিত টার্গেট নির্ধারণ করে বড়ভাঙ্গা মার্কেটে চলে যান। সেখান থেকে তারা দুই লিটারের পানির বোতলে পেট্রল সংগ্রহ করে আনুমানিক ভোর তিনটায় ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ঘটনাস্থলের নিরাপদ দূরত্বে গাড়ি থামিয়ে চালক মাহাবুবুর রহমান সোহাগ গাড়িতে অবস্থান করেন এবং মনির মুন্সি ও সাহেদ পেট্রলের বোতল নিয়ে রাস্তার পাশে পার্কিং করা অছিম পরিবহণের গাড়ির কাছে যান। সেখানে গাড়ির চালকের সিটের পাশে থাকা খোলা গ্লাসের অংশ দিয়ে চালকের সিটে মনির মুন্সি পেট্রল ঢেলে দেন। এরপর দিয়াশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। নিমিষেই গাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগিয়ে তারা গাড়িতে করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। তারা এক্ষেত্রে সম্ভাব্য বিপদ এড়ানোর জন্য উল্টো পথে ডেমরা এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠে সুফিয়া কামাল ব্রিজ দিয়ে ভুলতায় থাকা মনির মুন্সিদের মালিকানাধীন ‘মুন্সি পেট্রল পাম্প’-এ রাত্রিযাপন করেন। সকাল দশটার দিকে তারা পেট্রল পাম্প থেকে বাসায় চলে যান।
রাজধানীর ডেমরায় গত বছরের ২৮ অক্টোবর দিবাগত গভীর রাতে অছিম পরিবহণের বাসে আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছিল বলে দাবি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
কিলার বাদলের ইশারায় চলে অপরাধজগৎ!
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী বাদল ওরফে কিলার বাদলের নেতৃত্বে এলাকায় বেশ কয়েকটি ভয়ংকর কিশোর গ্যাং চক্র গড়ে উঠছে। তার নির্দেশে এ চক্রের সদস্যরা মোহাম্মদপুরজুড়ে ছিনতাই, মাদক বিক্রি, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির আধিপত্য বিস্তার করেছে। পুলিশের তথ্যমতে, কিলার বাদলের বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজি ও দখলবাজিসহ অন্তত শখানেক মামলা রয়েছে। তার অন্যতম সহযোগী হিসাবে লালু উদ্দিন লালু অন্যতম। বাদলের নির্দেশে লালু কিশোর গ্যাং সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করেন। স্থানীয়দের মতে, বর্তমানে কিলার বাদলকে কেউ না দেখলেও তার ইশারায় পুরো মোহাম্মদপুরের অপরাধজগৎ চলে। তার হাতিয়ার হিসাবে কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্যরা চাঁদাবাজি, দখলবাজি, ভূমি দখল ও হামলাসহ ভয়ংকর কাজ করছে। সড়ক ও ফুটপাত দখল করে দোকানপাট বসিয়ে টাকা আদায়, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে অথবা জমি দখলে বাধা দিলে কুপিয়ে হত্যা আবার কখনো গুরুতর আহত করা হয়। বাদলের ভয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা মুখ খুলতে সাহস পান না। তার হাতিয়ার হিসাবে কাজ করে সহযোগী লাল্লু, ইমন ওরফে জুট ইমন, ঘাট বাবু, গ্যারেজ সোহেল, বাত রাসেল, মাহিসহ অনেকে। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি ও অপহরণের মামলা রয়েছে। বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত বাদলের সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, ১৯৯৯ সালে কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারী হিসাবে বাদলের পথচলা শুরু। কাঁটাসুরের এক সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী এনআইয়ের হাত ধরে তার অপরাধ জগতে প্রবেশ। ডিশ ব্যবসায়ী ইকবালকে হত্যার মধ্য দিয়ে কিশোর বয়সেই বাদলের কিলিং মিশন শুরু হয়। এরপর কাঁটাসুরের বাবুল হত্যার মধ্য দিয়ে বাদল থেকে কিলার বাদল হিসাবে স্থানীয়দের কাছে সে পরিচিতি লাভ করে। ২০০২ সালে কমিশনার রাজু হত্যা ও মোহাম্মদপুরে ডাবল মার্ডারের (বস্তাবন্দি জোড়া লাশ) ঘটনায় বাদল সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। এরপর বাদল পেশাদার কিলার হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। ২০০৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর কাঁটাসুর এলাকায় ব্রাশফায়ারে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর মিরপুর থেকে অস্ত্রসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাদল কারাবন্দি ছিল। দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকার সুবাদে বিভিন্ন শীর্ষ ও মধ্যম সারির সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মোহাম্মদপুর এলাকার তিন রাস্তার মোড়ে লেগুনা থেকে চাঁদা তোলার কাজ করত লেগুনার লাইনম্যান নবী হোসেন। চাঁদা ও এলাকার আধিপত্য নিয়ে রাসেল ও কিলার বাদল অনুসারী মাহি গ্রুপের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত বছরের ৪ এপ্রিল লাইনম্যান নবী হোসেন নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পরদিন তুরাগ নদী থেকে তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। নবীর স্বজনরা জানান, নবী ছিলেন রাসেল গ্রুপের সদস্য। যদিও পুলিশ বলছে, নারীঘটিত কারণে পরিকল্পিতভাবে নবীকে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যারা নিয়ন্ত্রণ করে বাদলের সাম্রাজ্য : মোহাম্মদপুরের তিন রাস্তা মোড় এলাকায় জসিম, তিন রাস্তা মোড় থেকে আল্লাহ করীম মসজিদ পর্যন্ত সালাম ফুটপাত নিয়ন্ত্রণ করে বাদলের মূল সহযোগী লালু উদ্দিন লাল্লু। বাদলের ১৫-১৬টি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা লালু আধিপত্য বিস্তার করছে। কিশোর গ্যাং নেটওয়ার্কের মূল সমন্বয়ক হিসাবে কাজ করে সোহেল ওরফে গ্যারেজ সোহেল। গ্যাংগুলোর প্রধান হিসাবে কাজ করে ইমন ওরফে জুট ইমন। আইনি ঝামেলা এড়িয়ে বাদলের সব টাকা-পয়সার দেখভালের দায়িত্ব পালন করেন ইমন। বাদলের বিনিয়োগ করা টাকায় মোহাম্মদপুরের গার্মেন্টগুলোতে ঝুট ব্যবসা করে ইমন। মোহাম্মদপুর এলাকার ১৩টি কিশোর গ্যাং গ্রুপ ইমন ওরফে ঝুট ইমনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চাঁদ-উদ্যান এলাকায় গড়ে ওঠা ইমনের অফিস থেকে গ্রুপগুলো পরিচালনা করা হয়। র‌্যাব অফিসের কয়েক গজের মধ্যে চাঁদ-উদ্যান এলাকায় প্রতিদিনই চলে কিশোর গ্যাংয়ের গ্রুপগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া। ঝুট ইমনের সহায়তায় মোহাম্মদপুর কাঁটাসুর এলাকায় সাজ্জাদ ও চাঁদ-উদ্যান এলাকায় মাহি কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করে। মোহাম্মদপুর ও বসিলা এলাকাজুড়ে খেলার মাঠ বা খালি জায়গা দখল করে প্রতি সপ্তাহে বেশ কয়েকটি মেলা বসানো হয়। এসব মেলা থেকে চাঁদা উঠানোসহ সবকিছু দেখভালের দায়িত্ব পান করে ইমন। জানা যায়, পুলিশ, র‌্যাব ও অন্য সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ইমন ওরফে ঝুট ইমনের বিশেষ সখ্য রয়েছে। এ বিশেষ সখ্যের কারণে কিশোর গ্যাং সদস্যদের মারামারিতে কেউ বাধা দিলে তার ওপর নেমে আসে মামলাসহ নানা রকম হয়রানি। মোহাম্মদপুরের এক সময়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সুমন ওরফে কাইল্যা সুমন। সুমন কিলার বাদলের ভাই ও অন্যতম সহযোগী। বাদলের অন্যতম সহযোগী তাজেল গাজীও সুমনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। হত্যা, চুরি, ডাকাতি এবং ছিনতাইসহ বিভিন্ন মামলায় সুমন ২০০১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কারাভোগ করেছে। বাদলের মাদক ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক রনি ওরফে ভাগিনা রনি। ২০০২ সালে অপারেশন ক্লিন হার্ট অভিযানে সাতটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ রনি গ্রেফতার হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় কিলার বাদলের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। এরপর জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে কিলার বাদলের অন্যতম সহযোগী হিসাবে কাজ শুরু করে। এছাড়া মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় বাদলের দখলবাজ একাধিক গ্রুপ রয়েছে। এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক ভূঞা জানান, কিশোর গ্যাং সদস্যদের প্রতিনিয়ত আটক করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এর পেছনে যারা রয়েছে-তাদেরও আটকের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। বাদল ওরফে কিলার বাদলের নাম শুনেছি। আমরা ক্রমান্বয়ে সব অপরাধীকে আটক করতে কাজ করছি।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী বাদল ওরফে কিলার বাদলের নেতৃত্বে এলাকায় বেশ কয়েকটি ভয়ংকর কিশোর গ্যাং চক্র গড়ে উঠছে। তার নির্দেশে এ চক্রের সদস্যরা মোহাম্মদপুরজুড়ে ছিনতাই, মাদক বিক্রি, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির আধিপত্য বিস্তার করেছে। পুলিশের তথ্যমতে, কিলার বাদলের বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজি ও দখলবাজিসহ অন্তত শখানেক মামলা রয়েছে। তার অন্যতম সহযোগী হিসাবে লালু উদ্দিন লালু অন্যতম। বাদলের নির্দেশে লালু কিশোর গ্যাং সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকার মালিক প্রশ্নফাঁসের মূলহোতা অসিম গাইন
ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সংঘবদ্ধ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।  গ্রেফতার পাঁচজনের মধ্যে দুইজন ঢাবি শিক্ষার্থী ও তিনজন পরীক্ষার্থী। তারা হলেন- ঢাবি শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন (২৬) ও সুজন চন্দ্র রায় (২৫) এবং পরীক্ষার্থী মনিষ গাইন (৩৯), পংকজ গাইন (৩০) ও লাভলী মন্ডল (৩০)। এই চক্রের মূলহোতা অসিম গাইন। তার বাড়ি মাদারীপুর। ডিবির ভাষ্য, অসিম পলাতক রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে আসেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। হারুন বলেন, আমাদের তদন্তে এখন পর্যন্ত যে প্রমাণ পেয়েছি, তাতে এই চক্রের মূলহোতা অসিম গাইন। তার বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়। তিনি আগেও বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। তিনি অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় করেছেন। এই টাকা দিয়ে তার গ্রামে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব থাকা অসিমের মানবপাচার, হুন্ডি ব্যবসা ও ডিশের ব্যবসা রয়েছে। যেখানে তিনি প্রশ্ন ফাঁস করে আয় করা টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। আমরা তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। তাকে গ্রেফতার করলে কীভাবে প্রশ্নগুলো পান, সেই বিষয়ে পরিষ্কার হতে পারব।  ডিবির হারুন বলেন, গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২১ জেলার সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এই পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নের উত্তরপত্র ও ডিভাইসসহ মাদারীপুরে সাতজন ও রাজবাড়ীতে একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় দুই জেলায় আলাদাভাবে মামলা দায়ের করেন সংশ্লিষ্টরা। রাজবাড়ীতে আটক হওয়া পরীক্ষার্থী আদালতে নিজের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি জানান- কীভাবে এবং কখন তার মোবাইলে উত্তরপত্র এসেছে।  ডিবির হারুন জানান, অসিম তার ভাতিজা জ্যোতির্ময় গাইনকে প্রশ্ন সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছেন। আর পরীক্ষার দুই থেকে তিন মাস আগেই পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন অসিম। বিশেষ করে যাদের চাকরির বয়স শেষের পথে- এমন পরীক্ষার্থীদের টার্গেট করতেন তিনি। তাদের পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি করতেন। পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগেই প্রশ্নের উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন অসিম। তাদের সমাধান করে দেওয়া প্রশ্নের মধ্যে ৭২ থেকে ৭৫টিই মিলেছে।  এই ঘটনায় দুজনকে আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দিয়েছেন। যারা প্রশ্নের সমাধান করেছেন, আদালতে তারাও স্বীকার করেছেন। যারা প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন, তারাও স্বীকার করেছেন। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। জড়িত কেউ ছাড় পাবে না।
ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সংঘবদ্ধ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।
শিক্ষক নিয়োগ: পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে হাতে পৌঁছে যেত উত্তরপত্র
মন্ত্রণালয় থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পরও গত মাসে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি করা হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে উত্তরপত্র। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের এমন সংঘবদ্ধ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।  ডিবি জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে বসে এই পরীক্ষার প্রশ্নের সমাধান করত চক্রটি।  গ্রেফতার পাঁচজনের মধ্যে দুইজন ঢাবি শিক্ষার্থী ও তিনজন পরীক্ষার্থী। তারা হলেন- ঢাবি শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন (২৬) ও সুজন চন্দ্র রায় (২৫) এবং পরীক্ষার্থী মনিষ গাইন (৩৯), পংকজ গাইন (৩০) ও লাভলী মন্ডল (৩০)। তাদের গ্রেফতারের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরতে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে আসেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ডিবির হারুন বলেন, গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২১ জেলার সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এই পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নের উত্তরপত্র ও ডিভাইসসহ মাদারীপুরে সাতজন ও রাজবাড়ীতে একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় দুই জেলায় আলাদাভাবে মামলা দায়ের করেন সংশ্লিষ্টরা। রাজবাড়ীতে আটক হওয়া পরীক্ষার্থী আদালতে নিজের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি জানান- কীভাবে এবং কখন তার মোবাইলে উত্তরপত্র এসেছে।  হারুন জানান, মাদারীপুরে গ্রেফতার হওয়া পরীক্ষার্থীদের বেশিরভাগই জামিনে বের হয়ে যান। ঘটনাটি তদন্তের জন্য মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলমের অনুরোধে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগ তদন্তে নামে। গ্রেফতার করা হয় চক্রের সদস্য ঢাবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন ও সুজন চন্দ্রকে। তারা দুজনই ঢাবির জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তারা গোয়েন্দা পুলিশকে জানান- পরীক্ষার আগেই তারা প্রশ্ন সমাধানের জন্য পেয়েছেন। এই প্রশ্ন সমাধানের দায়িত্ব পেয়েছেন জ্যোতির্ময় গাইনের চাচা অসিম গাইনের মাধ্যমে। প্রশ্নপ্রতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাসে তাদের দিয়ে প্রশ্ন সমাধান করান অসিম। এই প্রস্তাবে জ্যোতির্ময় ও সুজনসহ সাতজন ঢাবির জগন্নাথ হলের জ্যোতির্ময়গুহ ঠাকুরতা ভবনের ২২৪ রুমে বসে তারা প্রশ্নের সমাধান করে পাঠান।  ডিবির হারুন জানান, অসিম তার ভাতিজা জ্যোতির্ময় গাইনকে প্রশ্ন সামাধানের দায়িত্ব দিয়েছেন। আর পরীক্ষার দুই থেকে তিন মাস আগেই পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন অসিম। বিশেষ করে যাদের চাকরির বয়স শেষের পথে- এমন পরীক্ষার্থীদের টার্গেট করতেন তিনি। তাদের পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি করতেন। পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে প্রশ্নের উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন অসিম। তাদের সমাধান করে দেওয়া প্রশ্নের মধ্যে ৭২ থেকে ৭৫টিই মিলেছে।  হারুন বলেন, এ ঘটনায় দুজনকে (অসিম ও জ্যোতির্ময়) আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দিয়েছেন। যারা প্রশ্নের সমাধান করেছেন, আদালতে তারাও স্বীকার করেছেন। যারা প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন, তারাও স্বীকার করেছেন। প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। ডিবি পরীক্ষা বাতিলের অনুরোধ জানাবে কি না- এমন প্রশ্নের জাবাবে হরুন অর রশীদ বলেন, মামলার তদন্তে পাওয়া সবকিছুই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন পরীক্ষা বাতিল করবেন, নাকি বহাল রাখবেন।
মন্ত্রণালয় থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পরও গত মাসে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি করা হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগেপরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে উত্তরপত্র। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের এমন সংঘবদ্ধ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।
রায়-আদেশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন নিশ্চিতে সব কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে: আপিল বিভাগ
সর্বোচ্চ আদালতের উভয় বিভাগের (আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ) রায় ও আদেশের পুরোপুরি বাস্তবায়ন নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রায় ও আদেশ বাস্তবায়নে ভবিষ্যতে নির্বাহী ও বিচারিক এবং সব কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে বলে এক রায়ে উল্লে­খ করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।  ‘মো. নুরুন্নবী ভূঁইয়া ও চারজন বনাম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী এবং অন্য’-এমন শিরোনামে আদালত অবমাননার পৃথক আবেদনের একসঙ্গে দেওয়া রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ এসেছে। সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ও কারা মহাপরিদর্শকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে করা পৃথক পাঁচটি আবেদন নিষ্পত্তি করে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রায় দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ।  বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। আট পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি ২৩ এপ্রিল সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণে আপিল বিভাগ বলেছেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে সতর্ক করে দিচ্ছি যে ভবিষ্যতে শুধু বর্তমান অবমাননার-বিবাদীরা (সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ও কারা মহাপরিদর্শক) নয়, নির্বাহী ও বিচারিক এবং প্রজাতন্ত্রের সব কর্তৃপক্ষকে সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের রায় ও আদেশের পুরোপুরি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সতর্ক থাকতে হবে।’ রায়ে আদালত বলেন, ‘এটি বিস্মিত করে যখন আমরা দেখেছি যে দেশের সর্বোচ্চ বিচার বিভাগের সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর অবমাননার-বিবাদীরা (সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ও কারা মহাপরিদর্শক) তা বাস্তবায়ন না করে নীরব ছিলেন। আদালত অবমাননার কার্যক্রম শুরু না করা পর্যন্ত তারা এই আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতে খুব অনীহা দেখিয়েছেন। এ ধরনের প্রবণতা কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যাই হোক, অবশেষে তারা এই বিভাগের (আপিল বিভাগের) সিদ্ধান্ত বিলম্বিতভাবে বাস্তবায়ন করেছেন এবং নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতির প্রার্থনা করেছেন।’ এই পর্যবেক্ষণের আলোকে আবেদনগুলো (আদালত অবমাননার অভিযোগে করা) নিষ্পত্তি করা হলো বলে রায়ে উল্লে­খ করেছেন আপিল বিভাগ। আদালত বলেছেন,  অবমাননার-বিবাদীদের (সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ও কারা মহাপরিদর্শক) আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। আইনজীবীর তথ্যমতে, ছয় কর্মকর্তা ২০০৮ সালে জেল সুপারের চলতি দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৮৪ সালের নিয়োগবিধি অনুসারে পূর্ণ নিয়োগ পেতে তথা পদোন্নতির জন্য ২০১৬ সালে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে বিফল হন। এ নিয়ে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে তাদের পক্ষে রায় পান। এর বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ আপিল ট্রাইব্যুনালে গেলে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত বাতিল হয়। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল বিভাগে আপিল করেন, যা ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল খারিজ হয়। আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ছয় কর্মকর্তা ২০১৯ সালে ছয়টি আবেদন (রিভিউ) করেন। জানা যায়, পদোন্নতি নিয়ে ছয় কারা কর্মকর্তার (জেল সুপার) করা পুনর্বিবেচনার আবেদনের (রিভিউ) ওপর ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল আপিল বিভাগ রায় দেন। রায়ে ১৯৮৪ সালের অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফ (ডিপার্টমেন্ট অব প্রিজন্স) রিক্রুটমেন্ট বিধিমালার আলোকে দ্রুত আবেদনকারীদের (ছয় জেল সুপার, চলতি দায়িত্ব) পদোন্নতির বিষয়টি বিবেচনা করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়। রায়ের নির্দেশনা বাস্তবায়িত না হওয়ায় আদালত অবমাননার অভিযোগে পদোন্নতিপ্রত্যাশী মো. নুরুন্নবী ভূঁইয়াসহ পাঁচ কর্মকর্তা ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর পৃথক পাঁচটি আবেদন করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী ও কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম আনিসুল হকের বিরুদ্ধে এই আবেদনগুলো করা হয়। পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর আপিল বিভাগ পদোন্নতিসংক্রান্ত রায় বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ও কারা মহাপরিদর্শককে আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেন। ধার্য তারিখ গত বছরের ৪ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী ও কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম আনিসুল হক আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সেদিন আদালত তাদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন। একই সঙ্গে পুরোপুরি রায় বাস্তবায়ন বিষয়ে জানাতে বলে চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য দিন রাখেন।  সেদিন শুনানি নিয়ে ওই রায় দেন আপিল বিভাগ। পূর্ণাঙ্গ রায়টি ২৩ এপ্রিল হাতে পেয়েছেন বলেন জানান পাঁচ কারা কর্মকর্তার আইনজীবী ইব্রাহীম খলিল। শনিবার তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আপিল বিভাগের রায় অনুসারে প্রথমে ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা দিয়ে ছয় কর্মকর্তাকে কারা তত্ত্বাবধায়ক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। পরে পাঁচজনকে ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা দিয়ে সিনিয়র জেল সুপার পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা দিয়ে চারজনকে কারা উপমহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। ছয়জনের মধ্যে দুজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রয়েছে। তাই এই দুজনের মধ্যে একজনকে সিনিয়র জেল সুপার থেকে কারা উপমহাপরিদর্শক পদে এবং অপর একজনকে জেল সুপার থেকে সিনিয়র জেল সুপার পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি।
সর্বোচ্চ আদালতের উভয় বিভাগের (আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ) রায় ও আদেশের পুরোপুরি বাস্তবায়ন নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রায় ও আদেশ বাস্তবায়নে ভবিষ্যতে নির্বাহী ও বিচারিক এবং সব কর্তৃপক্ষকেসতর্ক থাকতে হবে বলে এক রায়ে উল্লে­খ করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
পূর্ণাঙ্গ রায়: রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চ্যালেঞ্জ করে ৩৭ বছর আগে করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজের রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্মের স্বীকৃতি প্রদান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেও আঘাত করে না। বৃহস্পতিবার বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায়  দিয়েছেন। অন্য দুই বিচারপতি হলেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল। রিট খারিজের সিদ্ধান্তের সঙ্গে তিন বিচারপতি একমত পোষণ করেছেন। তবে বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল রায়ে পৃথক পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নাইমা হায়দারের লেখা পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদে সন্নিবেশিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম শুধু সংবিধানের প্রস্তাবনায় উল্লিখিত শুধু মৌলিক নীতিগুলো অন্য কোন বিধানের সাথেও অসঙ্গতিপূর্ণ নয়। সংবিধানে ইসলামকে  "রাষ্ট্রধর্ম মর্যাদা" প্রদান করা হলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে রাজনৈতিক মর্যাদা প্রদানের বাধ্যবাধকতা নেই। অনুচ্ছেদ ২(ক) অবশ্যই সামগ্রিকভাবে পড়তে হবে এবং পড়লে এটা সুস্পষ্ট হয় যে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার ধারণার সন্নিবেশ কোনভাবেই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সাংবিধানিক অধিকারকে খর্ব করে না। এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেও প্রভাবিত করে না এবং সংবিধানে বাহুল্যতাও সৃষ্টি করে না। রায়ে বলা হয়েছে, তর্কিত সংশোধনী সংবিধানে সন্নিবেশিত রাষ্ট্রধর্ম ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাকেও প্রভাবিত করে না। অতএব, আমরা মনে করি তর্কিত সংশোধনীর মাধ্যমে অনুচ্ছেদ ২ক সন্নিবেশ করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান সংবিধান বিরোধী নয়। বিষয়টিকে সহজ করার প্রয়াস হিসেবে, উপস্থাপিত যুক্তিতর্ক আমরা আমাদের রায়ে  আলোচনা করেছি। রিট আবেদনকারী এবং বিবাদী পক্ষের আইনজীবীগণের সুনির্দিষ্ট আইনগত যুক্তিসমূহ  আমরা রায়ে প্রকাশ  করা থেকে বিরত থেকেছি কারণ সাংবিধানিক বিষয় "সামগ্রিকভাবে " আলোচনা করা উচিত।উপরোক্ত আলোচনার আলোকে রুল  খারিজ করা হলো।  রায়ে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধর্মকে যে রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা দেয়া হয়েছে সে বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। বিচারপতি কাজী রেজাউল হক রায়ের এ পর্যবেক্ষণের একমত প্রকাশ করেছেন। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল তার পৃথক পর্যবেক্ষণে বলেছেন,পঞ্চম সংশোধনীর মতই সপ্তম সংশোধনীর মূল উদ্দেশ্য ছিল সামরিক শাসন বৈধ করা এবং সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠাকারীকে বাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ থেকে রক্ষা করা। এই সংশোধনীতে দেশ অথবা জনগোষ্ঠীর স্বার্থ কোথায়? সামরিক স্বৈরশাসন সজ্ঞাগতভাবেই ধর্ম, নীতি ও আদর্শের তোয়াক্কা করে না অথচ তাবা অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে ঘোষণা করল। দেশে কোন ধর্মীয় সংকট ছিল না। ছিল না কোনো সাংবিধানিক সংকট। তাছাড়া এ বিষয়ে জনগণের পক্ষ থেকে কোন দাবিও উত্থাপিত হয়নি। আশির দশকের স্বৈরশাসকরা রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা ব্যতিরেকে যা কিছু করেছেন তার সবই অধর্ম, অন্যায়, নীতিহীনতা, প্রতারণা, লুটতরাজ এবং বল্লাহীন দুর্নীতি। সন্ত্রাস এবং কুশাসন এ সব কিছু মিলেই এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্যে এদেশের সব শ্রেণি ও পেশার মানুষ দীর্ঘ নয় বছর ধরে এই স্বৈরশাসনের অবসানের জন্য সংগ্রাম, ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গ করেছে। ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ  রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, এই রিটে আবেদনকারীর আবেদনের এখতিয়ার (লোকাস স্ট্যান্ডি) নেই। বিচারপতি নাঈমা হায়দার, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ এ রায় দেন। ১৯৮৮ সালে অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে সংযুক্ত করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সংবিধানে ২ (ক) অনুচ্ছেদ যুক্ত করে বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাবে। তখন স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে ওই বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন ১৫ জন বরেণ্য ব্যক্তি। তাদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছেন। তারা হলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, বিচারপতি দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, বিচারপতি কে এম সোবহান, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক খান সারওয়ার মুরশিদ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, শিল্পী কলিম শরাফী, অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন ও সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ,অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্ত, লেখক বদরুদ্দীন উমর, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। রিট আবেদনের ২৩ বছর পর ২০১১ সালের ৮ জুন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল দেন। ওই দিনই অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের সহায়তাকারী) হিসেবে ১৪ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে নিয়োগ দেয়া হয়। তারা হলেন, ড. এম জহির, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, টি এইচ খান, ড. কামাল হোসেন, রফিক-উল হক, এম আমীর-উল ইসলাম, এ এফ হাসান আরিফ, রোকনউদ্দিন মাহমুদ, আখতার ইমাম, ফিদা এম কামাল, আজমালুল হোসেন কিউসি, আবদুল মতিন খসরু, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও আ ফ ম মেজবাহ উদ্দিন। ওই রুল জারির প্রায় পাঁচ বছর পর ২০১৬ সালের ৮ মার্চ এই রুল শুনানির জন্য আদালতে ওঠে। ওই দিন আদালত অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগের আদেশটি প্রত্যাহার করেন। পরে ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন আদালত।
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চ্যালেঞ্জ করে ৩৭ বছর আগে করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজের রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্মের স্বীকৃতি প্রদান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেও আঘাত করে না।
রাশেদ বিন আমানের বিরুদ্ধে ফের গ্রেফতারি পরোয়ানা
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের বহিষ্কৃত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর রাশেদ বিন আমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। রামপুরা থানায় করা মামলায় বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে এ পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হায়দারের আদালত। আদালত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আদালত সূত্র জানায়, অর্থ আত্মসাতের মামলায় গত ৫ মার্চ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন রাশেদ বিন আমান। পরে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান। এরপর তিনি জামিনে মুক্ত হন। ওই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ফের তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গত ১১ জানুয়ারি রামপুরা থানায় সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ মোস্তফা গোলাম এমরান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এতে মীর রাশেদ বিন আমানসহ কোম্পানির সাবেক ৭ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়।  মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে অর্থ আত্মসাৎসহ হুমকি প্রদানের অভিযোগ আনা হয়।
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের বহিষ্কৃত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর রাশেদ বিন আমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
আ.লীগ নেতা টিপু হত্যা: অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ, আদেশ সোমবার
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ৩৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৯ এপ্রিল সোমবার দিন ধার্য করেছেন আদালত।  বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আলী হোসাইনের আদালতে এ মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য ধার্য ছিল। এদিন ২৬ আসামির পক্ষে অব্যাহতি ও ১৯ আসামির জামিন চেয়ে শুনানি করেন আইনজীবীরা। শুনানি শেষে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ও জামিনের বিষয়ে আদেশের জন্য ২৯ এপ্রিল দিন ধার্য করেন। এর আগে গত বছরের ৫ জুন শাহজানপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় এ চার্জশিট দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার। প্রতিবেদনে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার। তবে এক্সেল সোহেল নামে এক আসামির পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিচারের জন্য ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পরে ২০ জুন এ মামলায় বিদেশে পলাতক দুই সন্ত্রাসী জিসান ও ফ্রিডম মানিকসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। চার্জশিটভুক্ত উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সদস্য কাইল্যা পলাশ, একই ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ‘ঘাতক’ সোহেল, সুমন শিকদার মুসা, মুসার ভাগনে সৈকত, মুসার ভাতিজা শিকদার আকাশ, ইমরান হোসেন জিতু, মোল্লা শামীম, রাকিব, বিডি বাবু, ওমর ফারুক, ‘কিলার’ নাসির, রিফাত, ইশতিয়াক হোসেন জিতু, মাহবুবুর রহমান টিটু, হাফিজ, মাসুম ও রানা মোল্লা। এদের মধ্যে মুসা, শুটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন মানিক আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শো-রুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন।  চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর ওই রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে টিপুর স্ত্রী অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুর থানার ২০২ উত্তর শাহজাহানপুর মানামা ভবনের বাটার দোকানের সামনে পৌঁছামাত্র অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা হামলা করেন। তারা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করেন।
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ৩৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৯ এপ্রিল সোমবার দিন ধার্য করেছেন আদালত।
যে কারণে খালাস পেলেন গোল্ডেন মনির
মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরকে অস্ত্র মামলায় খালাস দিয়েছেন আদালত। আদালতের ভাষ্য, গোল্ডেন মনিরের মামলা সাজানো, তার অস্ত্র বৈধ।  র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) করা একটি অস্ত্র মামলায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান সম্প্রতি এ রায় দিয়েছেন। আদালতের রায়ের তথ্য অনুযায়ী, র‌্যাব মামলায় বলেছিল, ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর মনির হোসেনের বাড্ডার বাসায় র‌্যাব অভিযান চালিয়েছিল সকাল ৬টায়। বাসার তৃতীয় তলায় শয়নকক্ষের তোশকের নিচ থেকে ম্যাগাজিনভর্তি একটি পিস্তল উদ্ধার করে তারা। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল না। অস্ত্র আইনে মামলার পর মনিরকে আদালতের অনুমতি নিয়ে সাত দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। অভিযোগ গঠনের পর রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৬ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত বলেছেন, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়া ১৬ সাক্ষীর মধ্যে দুজন পাবলিক সাক্ষী। অন্যরা সবাই পুলিশ সদস্য। মামলার ১৩ নম্বর পাবলিক সাক্ষী এমাদ উদ্দিন আদালতকে বলেন, ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওষুধের দোকানে কর্মরত থাকা অবস্থায় র‌্যাব সদস্যরা তাকে ডেকে নিয়ে যান। পরে মনিরের বাসার একটি কক্ষে সারা রাত বসিয়ে রাখা হয় তাকে। মধ্যরাতে (রাত ৩টা) র‌্যাব কর্মকর্তারা একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। পরদিন সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মামলার ১৪তম সাক্ষী মোবারক হোসেন আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, তাকেও রাত সাড়ে ১০টার দিকে র‌্যাবের সদস্যরা ডেকে মনিরের বাসায় নিয়ে যান। তার কাছ থেকেও সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন র‌্যাবের সদস্যরা। রায়ে বলা হয়েছে- পাবলিক সাক্ষী এমাদ ও মোবারকদের উপস্থিতিতে মনিরের বাসার শয়নকক্ষ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের অভিযোগ সমর্থন করে না। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের তথ্য বিশ্লেষণে প্রমাণিত হয়, মনিরের বাসায় সকাল সাড়ে ৬টায় নয়; অভিযান চালানো হয় রাত সাড়ে ১০টায়। বিশেষ উদ্দেশ্যে মনিরের বাসায় অভিযান চালানো হয়। রাষ্ট্রপক্ষের মামলাটি সাজানো। অন্য সাক্ষীরা মনিরের শয়নকক্ষ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য নয়। রায়ে বলা হয়েছে, মনিরের বাসা থেকে উদ্ধার অস্ত্রের ফরেনসিক পরীক্ষা করানো হয়েছে বলে কোনো তথ্য নথিতে উল্লেখ নেই। আবার মামলা করতে দেরি হয় ১৯ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। এত বিলম্বের ব্যাখ্যা সন্তোষজনক নয়। রায়ের তথ্য বলছে, মামলার সাক্ষী উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক চন্দ্র রায় আদালতকে বলেন, মনির হোসেনকে তার বাসার দোতলা থেকে গ্রেফতার করা হয়। আরেক সাক্ষী এসআই জামাল হোসেন ও এএসআই নাজিম উদ্দিন বলেন, মনির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয় বাসার তৃতীয় তলা থেকে। অর্থাৎ সাক্ষীদের সাক্ষ্য পরস্পরবিরোধী। আদালত আরও উল্লেখ করেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের পরিদর্শক আবদুল মালেক আদালতকে বলেছেন, তদন্তের সময় তিনি জানতে পারেন, মনির ও তার স্ত্রীর নামে দুটি লাইসেন্স করা অস্ত্র ছিল। অর্থাৎ আবদুল মালেকের সাক্ষ্য থেকে স্পষ্ট যে মনির ও তার স্ত্রীর নামে দুটি বৈধ অস্ত্র ছিল। বৈধ অস্ত্র থাকা অবস্থায় আরেকটি অবৈধ অস্ত্র ঘরে রাখার ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য নয়। দোকানকর্মী থেকে স্বর্ণ চোরাচালানি   মানি লন্ডারিং মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, গোল্ডেন মনির ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৭৯১ কোটি ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫২৩ টাকা জমা করা হয়। মনির এ আয়ের একটি অংশ সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যদের যোগসাজশে যৌথ ও একক নামে ব্যবসায় বিনিয়োগ করে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিতে রূপান্তর করেছেন। মনিরকে গ্রেফতার করার পর র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নব্বইয়ের দশকে গাউছিয়া মার্কেটে কাপড়ের দোকানের বিক্রয়কর্মী ছিলেন মনির। পরে মৌচাক মার্কেটের ক্রোকারিজের দোকানে চাকরি নেন। এরপর তিনি বিমানবন্দরকেন্দ্রিক লাগেজ পার্টি ও সোনা চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন। পরিচিতি পান ‘গোল্ডেন মনির’ নামে। বিক্রয়কর্মী থেকে লাগেজ পার্টিতে যোগ দেওয়ার পর মনির শুরুতে কর ফাঁকি দিয়ে কাপড়, প্রসাধনী, ইলেকট্রনিক পণ্য, কম্পিউটার-সামগ্রীসহ বিভিন্ন মালামাল আনা-নেওয়া করতেন। একপর্যায়ে আকাশপথে সোনা চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন। এদিকে সিআইডির তথ্য বলছে, অপরাধলব্ধ আয় দিয়ে গোল্ডেন মনির স্ত্রী, ছেলে ও নিজের নামে সরকারি ২০টিসহ ৩০টি প্লট, ১৫টি বাড়ি, একটি আবাসন প্রতিষ্ঠান ও দুটি গাড়ির শোরুম করেছেন। অথচ মনির ২০০৯ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে দাখিল করা সম্পদের হিসাব বিবরণীতে উল্লেখ করেছিলেন, তার স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি টাকা। আর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৬৭ লাখ টাকা।
মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরকে অস্ত্র মামলায় খালাস দিয়েছেন আদালত। আদালতের ভাষ্য, গোল্ডেন মনিরের মামলা সাজানো, তার অস্ত্র বৈধ।
অস্ত্র মামলায় গোল্ডেন মনির খালাস
মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরকে অস্ত্র মামলায় খালাস দিয়েছেন আদালত। রায়ে আদালত বলেছেন, পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেছেন- মনির ও তার স্ত্রীর নামে লাইসেন্স করা অস্ত্র ছিল। তাই নিজের ও স্ত্রীর নামে দুটি বৈধ অস্ত্র থাকা অবস্থায় আরেকটি অবৈধ অস্ত্র ঘরে রাখার ঘটনা স্বাভাবিক ও বিশ্বাসযোগ্য নয়। আদালত আরও বলেছেন, ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৬টায় মনির হোসেনের বাড্ডার বাসার শয়নকক্ষে খাটের তোশকের নিচ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) করা একটি অস্ত্র মামলায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান সম্প্রতি এ রায় দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বলেন, অস্ত্র মামলায় মনির হোসেনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার পর পর্যালোচনা সাপেক্ষে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। অবশ্য মনিরের আইনজীবী দবির উদ্দিন বলেন, রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, মনিরকে হয়রানির উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা করা হয়। রাজধানীর মেরুল বাড্ডার বাসায় ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর অভিযান চালিয়ে মনিরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ সময় একটি বিদেশি পিস্তল, চার লিটার বিদেশি মদ, ৩২টি নকল সিল, ৮ লাখ টাকার বেশি মূল্যমানের বৈদেশিক মুদ্রা, ৬০০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১ কোটি ৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় অস্ত্র আইনসহ বাড্ডা থানায় পৃথক তিনটি মামলা করেছিল র‌্যাব। পরে মনিরের অবৈধ সম্পদ ও অপরাধলব্ধ আয়ের তথ্য-প্রমাণ পেয়ে ২০২২ সালের ১১ মে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। এছাড়া বিশেষ ক্ষমতা আইন ও জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরকে অস্ত্র মামলায় খালাস দিয়েছেন আদালত। রায়ে আদালত বলেছেন, পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেছেন- মনির ও তার স্ত্রীর নামে লাইসেন্স করা অস্ত্র ছিল। তাই নিজের ও স্ত্রীর নামে দুটি বৈধ অস্ত্র থাকা অবস্থায় আরেকটি অবৈধ অস্ত্র ঘরে রাখার ঘটনা স্বাভাবিক ও বিশ্বাসযোগ্য নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন টিআইবি ডিইউজে ডিআরইউ
তথ্য সংগ্রহে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি)।  শনিবার এক বিবৃতিতে ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।  নেতারা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি। তারা বলেন, ৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে সাংবাদিকরা। এতে কখনও তাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। হঠাৎ করে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা সৃষ্টি করায় ব্যাংকিং খাত নিয়ে ভুল সংবাদ প্রকাশ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে, যা কোনো পক্ষেরই কাম্য নয়। নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য সংগ্রহের কাজে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে গভর্নরকে জোরালোভাবে অনুরোধ জানান। অন্যথায় এর প্রতিবাদে ডিইউজের পক্ষ থেকে কর্মসূচি দেয়া ছাড়া বিকল্প কোনো পথ থাকবে না।   শুক্রবার ডিআরইউর কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুল ইসলাম শামীম ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিনও এক বিবৃতিতে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, প্রতিবেদকেরা সব সময় অবাধে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে আসছেন। হঠাৎ করে তাদের প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করা উদ্দেশ্যমূলক ও অনভিপ্রেত; এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি। ফলে ব্যাংক খাত নিয়ে ভুল প্রতিবেদন হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে, যা কোনো পক্ষেরই কাম্য নয়। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি স্বেচ্ছাচারিতামূলক গোপনীয়তা আরোপের নিন্দনীয় দৃষ্টান্ত হিসাবে উল্লে­খ করে টিআইবি। এমন পদক্ষেপে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে জনস্বার্থে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের তথ্য প্রকাশে অবিলম্বে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানায় সংস্থাটি। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কি তাহলে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ঋণখেলাপি, জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের মতো অপরাধীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে? বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি ও নেতৃত্ব যে অপরাধী চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে, তা গোপন করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তথ্য সংগ্রহে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি)।
এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, বিচার দাবিতে মানববন্ধন
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা।  বুধবার দুপুর থেকে টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে এফডিসির সামনে মানববন্ধন করেন বিনোদন সাংবাদিকসহ অন্য বিটের সাংবাদিকরা। মানববন্ধনে হামলায় জড়িত অভিনেতা জয় চৌধুরী, শিবা শানু ও আলেকজান্ডার বোকে সমিতির সদস্যপদ বাতিলসহ যথাযথ শাস্তির দাবি জানান। হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন সমিতির নতুন সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজল। এ ঘটনায় সমিতির পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানানো হয়। হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন শিল্পী সমিতির সাবেক সহসভাপতি চিত্রনায়ক রিয়াজ। ঘটনা তদন্তে প্রযোজক আরশাদ আদনানকে প্রধান উপদেষ্টা করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ডিইউজের নবনির্বাচিত সভাপতি সাজ্জাদ আলম তপু ও সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রুব, বাচসাসের সভাপতি রিমন মাহফুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু।  বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার বিকালে কয়েকজন শিল্পীর নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায় এফডিসির কর্মীরা। এ ঘটনায় সাংবাদিক, ক্যামেরাপারসন, ইউটিউবারসহ ২০ জনের মতো আহত হন। এদের মধ্যে চারজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা।
যুগান্তরের সাংবাদিক ফরিদের ওপর হামলায় মামলা
যুগান্তর পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টার ইকবাল হাসান ফরিদের ওপর ঝাঁজালো কেমিক্যাল নিক্ষেপের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। রোববার ফরিদ বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় মামলাটি করেন। তবে ঘটনার দুই দিনেও হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।  মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজীব শিকদার যুগান্তরকে বলেন, মামলার কপি এখনো পাইনি। কপি পাওয়ার পর করণীয় নির্ধারণ করা হবে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ আসামি গ্রেফতারে সর্বাÍক চেষ্টা করা হবে। এদিকে রোববার সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে সাংবাদিক ফরিদ বাসায় ফিরেছেন। ভুক্তভোগী ফরিদ জানান, হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরলেও শরীরে জ্বালাপোড়া অনুভব করছেন। শরীরে এখনো জটিলতা রয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ সুস্থ হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। এনাম মেডিকেলের চিকিৎসকরা জানান, ফরিদের শরীরে মরিচের গুঁড়াসদৃশ রাসায়নিক পদার্থ (কেমিক্যাল) নিক্ষেপ করা হয়েছে। ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্ ও ট্রাফিক, উত্তর বিভাগ) আব্দুল্লাহিল কাফী যুগান্তরকে বলেন, ঘটনার পর পুলিশ তাৎক্ষণিক সাংবাদিক ফরিদের খোঁজখবর নিয়েছে। থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক টিম কাজ শুরু করেছে। হামলাকারীদের গ্রেফতারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে সাভারের কলমা এলাকায় ফরিদের ওপর দুর্বৃত্তরা ঝাঁজালো কেমিক্যাল নিক্ষেপ করে। এতে যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা ফরিদকে তাৎক্ষণিক প্রথমে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  সাভার মডেল থানায় করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সাভারের দক্ষিণ কলমার বাসা সংলগ্ন রাস্তায় শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে পৌঁছালে মাস্ক পরিহিত অজ্ঞাতনামা ২-৩ জন ফরিদকে পথরোধ করে। নিজেদের তারা স্থানীয় দুই জনপ্রতিনিধির লোক দাবি করে তাকে আগামী এক মাসের মধ্যে সপরিবারে সাভার ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়। তা না হলে সপরিবারে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। একপর্যায়ে হঠাৎ ফরিদের পেছন দিক থেকে একজন তার মাথা, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পাউডারজাতীয় কিছু দ্রব্য ছুড়ে মারে। এ সময় তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে করতে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। শরীরে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া শুরু হলে তিনি চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকার শুনে তার স্ত্রী তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।  এজাহারে আরও বলা হয়, বিবাদীরা যে দুই জনপ্রতিনিধির নাম বলেছে, তাদের সঙ্গে ফরিদের কোনো বিবাদ বা দ্বন্দ্ব নেই। ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে জনপ্রতিনিধিদের নাম ব্যবহার করা হতে পারে বলে ফরিদের ধারণা।
যুগান্তর পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টার ইকবাল হাসান ফরিদের ওপর ঝাঁজালো কেমিক্যাল নিক্ষেপের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। রোববার ফরিদ বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় মামলাটি করেন। তবে ঘটনার দুই দিনেও হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।
অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধের ঘোষণা
দেশে প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের অনলাইন, অনলাইনের জন্য নিবন্ধিত এবং নিবন্ধন পেতে আবেদন করা অনলাইন গণমাধ্যম ছাড়া বাকি সব অনলাইন বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত।  শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ ঘোষণা দেন। ডিআরইউ’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক) মিজান রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে একেবারে প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের ২১৩টি অনলাইন আছে। আর নিবন্ধিত অনলাইন আছে ২১৩টি। অর্থাৎ মোট ৪২৬টি অনলাইন আছে। একই সঙ্গে যেগুলো দরখাস্ত করেছে, প্রক্রিয়াধীন আছে সবগুলোর লিস্ট করতে বলা হয়েছে। এর বাইরে যত অনলাইন নিউজ পোর্টাল আছে, সেগুলো আমরা সব বন্ধ করে দেব।  তিনি বলেন, দরখাস্ত করলে নিবন্ধন পাওয়ার আগ পর্যন্ত বন্ধ হবে না। কারণ, নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা অনলাইন কিভাবে চলছে সেটা দেখতে হবে। বর্তমান সরকারের ১০০ দিনে তথ্য প্রতিমন্ত্রী কতটা সফল- এমন এক প্রশ্নের উত্তরে আরাফাত বলেন, ১০০ দিন খুবই অল্প সময় বড় রকমের সফলতা দাবি করার জন্য। অনেক কাজ এগিয়েছে, কাজ যখন প্রক্রিয়াধীন থাকে সেটাকে প্রকাশ করা যায় না, ফলাফলটা যখন আসবে তখন করা যাবে।  তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারমুক্ত গণমাধ্যম, সাংবাদিকতার চমৎকার পরিবেশ এবং মত-প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য যা যা উপকরণ লাগে সেই বিষয়গুলোকে নিশ্চিত করতে চাই। আর মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান, তারাই অপতথ্যের ওপর ভর করে অপরাজনীতি করে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, তথ্য প্রবাহকে অবারিত করতে চাই। তথ্য অধিকার আইন শেখ হাসিনার আমলেই সংসদে পাশ হয়েছে। তথ্য পাওয়ার অধিকার আইনগতভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে সেটাকে বাস্তবে আমরা আরও বেশি নিশ্চিত করতে চাই। রাষ্ট্র পরিচালনায় যারা আছেন তাদের অনেকের তথ্য সরবরাহে কিছুটা অনীহা আছে। তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরা একটা বার্তা দিয়েছি, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে। আমরা চাচ্ছি তথ্য অধিকার আইনকে আরও সুদৃঢ় করার জন্য। তথ্য যদি চাওয়া হয় তবে তথ্য দিতে হবে। তিনি বলেন, জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকার আছে। এই তথ্য দেওয়ার বিষয়টি আমাদের ক্ষেত্রেও বাধ্যতামূলক। এটাকে জাগ্রত করার চেষ্টা করছি প্রশাসনের প্রত্যেকটি স্তরে। যদি তথ্য না থাকে তখনই অপপ্রচারের সুযোগ তৈরি হয়। কাজেই কিছু প্রশাসনিক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। যেন খুবই অল্প সময়ের মধ্যে সাংবাদিকদের কাছে তথ্য পৌঁছাতে পারি এবং আপনারা জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, একইভাবে তথ্যের বিপরীতে অপতথ্য সমাজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। তাই সবাই মিলে কিভাবে তথ্যের অবাধ প্রবাহকে আরও সুনিশ্চিত করতে পারি এবং এটি করতে গিয়ে আমি যেটা চিন্তা করি অপতথ্যকে রোধ করতে হবে। সাংবাদিকতার মধ্যে যারা পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে অপসাংবাদিকতা করার চেষ্টা করে, আসল সাংবাদিকতাকে তারা সবচেয়ে বেশি প্রশ্নবিদ্ধ করে। আরাফাত বলেন, সমাজে অপশক্তি আছে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি। অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সমাজের বিপরীতে তারা একটি অন্ধকারের সমাজ তৈরি করতে চায়। জঙ্গিবাদ মৌলবাদের সমাজ তৈরি করতে চায়। এই অপশক্তির সঙ্গে আমাদের নিরন্তর লড়াই। এই লড়াই করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বাস্তবায়ন, অর্থাৎ মুক্ত গণতন্ত্র, মুক্ত গণমাধ্যম, অবাধ মত-প্রকাশের স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে কখনো কখনো হোঁচট খেয়েছি। ক্লাইমেট ঝুঁকির চেয়ে বেশি ঝুঁকি হচ্ছে অপতথ্যের ঝুঁকি। সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষ করে এখানে কোনো ধরনের নীতিমালা না থাকার কারণে এই অপতথ্যের বিস্তার ঘটছে। তিনি বলেন, মূলধারার গণমাধ্যমে একটা নীতিমালা আছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো নীতিমালা না থাকার কারণে এর ডালপালা বিস্তৃত হচ্ছে। সেইখানে আমরা একটা নীতিমালার আওতায় আনতে চাচ্ছি। মিথ্যা খবর কোনোভাবে সমাজের কল্যাণ আনতে পারে না। এখানে সবাই একমত। আমরা কিন্তু বলছি না সরকারের পক্ষে বা আওয়ামী লীগের পক্ষে হোক। কিন্তু খবর সত্য হোক সেটা সরকার বা আওয়ামী লীগের পক্ষে-বিপক্ষে যাক।
দেশে প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের অনলাইন, অনলাইনের জন্য নিবন্ধিত এবং নিবন্ধন পেতে আবেদন করা অনলাইন গণমাধ্যম ছাড়া বাকি সব অনলাইন বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত।
যুগান্তর সাংবাদিকের ওপর ঝাঁঝালো কেমিক্যাল নিক্ষেপ, এলাকা ছাড়ার হুমকি
দৈনিক যুগান্তরের ক্রাইম রিপোর্টার ইকবাল হাসান ফরিদের ওপর ঝাঁঝালো কেমিক্যাল নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকার অদূরে সাভারের কলমা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  দুর্বৃত্তরা এ সময় সাভারের স্থানীয় দুজন জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে তাদের নির্দেশনার কথা জানিয়ে ইকবাল হাসান ফরিদকে এক মাসের মধ্যে সাভার ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। অন্যথায় তাকে সপরিবারে হত্যা করা হবে।  ঘটনার পর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ফরিদকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রথমে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাংবাদিক ইকবাল হাসান ফরিদ বলেন, ‘রাতে অফিস শেষে রাজধানী ঢাকা থেকে সাভারের বাসায় ফিরছিলাম। পৌনে ১২টার দিকে বাসার অদূরে অন্ধকার গলিতে পৌঁছালে পেছন থেকে একজন মুখোশধারী যুবক আমাকে নাম ধরে ডাক দেন। ডাক শুনে দাঁড়ানোর পর মুখোশধারী দুই যুবক স্থানীয় দুই জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে আমাকে এক মাসের মধ্যে এলাকা (সাভার) ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। অন্যথায় সপরিবারে আমাকে হত্যা করবে বলে হুমকি দেন তারা।  ‘এরপর কিছু বুঝে উঠার আগেই পেছন থেকে তাদের একজন মরিচের গুঁড়া সদৃশ এক প্রকার ঝাঁঝালো কেমিক্যাল আমার মাথায় ও চোখেমুখে ছিটিয়ে দেন এবং আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে তারা চলে যান। এরপর চোখমুখে ও শরীরে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া শুরু হলে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়’। তিনি বলেন, দুর্বৃত্তরা সাভারের যে দুজন জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে আমাকে হুমকি দিয়েছেন তাদের কারো সঙ্গেই আমার পরিচয়, যোগাযোগ কিংবা কোনো ধরনের বিরোধ নেই। তৃতীয় কোনো পক্ষ ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের লক্ষ্যে তাদের নাম ব্যবহার করে থাকতে পারে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সঠিক তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে মনে করি।  এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি সাংবাদিক ফরিদকে হাসপাতালে দেখতে যান সাভার মডেল থানার ওসি মো. শাহজামান। এ সময় তদন্ত করে হামলাকারীদের খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
দৈনিক যুগান্তরের ক্রাইম রিপোর্টার ইকবাল হাসান ফরিদের ওপর ঝাঁঝালো কেমিক্যাল নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকার অদূরে সাভারের কলমা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অনিবন্ধিত ও অবৈধ অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধে পদক্ষেপ নেবে সরকার
দেশের অনিবন্ধিত ও অবৈধ অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধে সরকার পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনলাইন নিউজ পোর্টাল অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ওনাব) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি একথা জানান। ওনাবসহ অন্যান্য পেশাদার সাংবাদিকদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি করতে চায় না। তবে সাংবাদিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল অ্যাসোসিয়েশনের দাবির সঙ্গে আমি একাত্মতা প্রকাশ করছি যে একটা শৃঙ্খলা আনা দরকার। যেহেতু নিবন্ধনের একটি প্রক্রিয়া আছে সে প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা খুবই জরুরি। দায়িত্বশীল সাংবাদিক ও সাংবাদিকতাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নিবন্ধিত অনলাইন গণমাধ্যমকে প্রণোদনা ও সমর্থন দেওয়ার প্রয়োজন আছে। এ বিষয়ে আমি আপনাদের (সাংবাদিকদের) সঙ্গে একমত। এ সময় তিনি বলেন, সাংবাদিকরাই বলছেন শৃঙ্খলার জন্য নজরদারি দরকার। গণমাধ্যম এতটাই মুক্ত ও স্বাধীন যে নিবন্ধন ছাড়াও তারা চলছে এবং নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের কথা পেশাদার সাংবাদিকরাই বলছেন। এটা প্রমাণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মুক্ত গণমাধ্যম এবং গণমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। তবে অবাধ স্বাধীনতার কারণে কিছুটা শৃঙ্খলার অভাবও হয়ে যাচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনিবন্ধিত পোর্টালগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মানহানিকর অপতথ্যের বিস্তার হয়। এ অপতথ্যের বিস্তার অনলাইন নিউজ পোর্টাল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের ছাড়াও বিভিন্ন পেশাদার সাংবাদিকদের পীড়া দেয় বলে বিভিন্ন সময় তারা জানিয়েছেন। এটা খুব ভালো দিক যে, আমাদের সাংবাদিকরা চাচ্ছেন গণমাধ্যমে একটা শৃঙ্খলা এবং দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার বিকাশ। এখানে সরকার পূর্ণাঙ্গভাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে একমত।  তিনি আরও বলেন, সরকার গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণে নয় বরং স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করে। নজরদারিতে নয় বরং দায়িত্বশীলতায় বিশ্বাস করে। আমরা মুক্ত গণমাধ্যম ও স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করি। অপতথ্যের বিস্তৃতি, গুজব ও অপপ্রচার সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম, গণতন্ত্র সবকিছুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সবার স্বার্থে এগুলো রোধ করার জন্য সরকার ও  গণমাধ্যমের একটি অংশীদারিত্ব দরকার। গণমাধ্যমের বিজ্ঞাপন নীতিমালাসহ অন্যান্য নীতিমালা সময়োপযোগী ও আধুনিকীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলেও এ সময় জানান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী। মতবিনিময় সভায় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অ্যাসোসিয়েশন (ওনাব) সভাপতি মোল্লাহ এম আমজাদ হোসেন, সহ-সভাপতি লতিফুল বারী হামিম ও সৌমিত্র দেব, যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান ও আশরাফুল কবির আসিফ, কার্যনির্বাহী সদস্য নজরুল ইসলাম মিঠু, তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু, রফিকুল বাসার, হামিদ মো. জসিম, মহসিন হোসেন, অয়ন আহমেদ ও খোকন কুমার রায় উপস্থিত ছিলেন।
দেশের অনিবন্ধিত ও অবৈধ অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধে সরকার পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

We created a dataset by web scraping different online newspapers like ‘The Daily Star’, ‘ProthomAlo’, and ‘BBC News Bangla’ using the Beautiful Soup library of Python. The dataset's features are ‘title’, ‘text’ & ‘summary’. The dataset was preprocessed using the Python library ‘pandas’ and all duplicates and null values were eliminated and the total number of rows remaining is 9311. Since there is a lack of datasets in the Bengali language, this dataset will be useful for tasks like text summarization and other NLP tasks tailored to the Bengali language.

Downloads last month
56
Edit dataset card